সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

যা থামলেই শেষ ( এ কারনে চলবে) ৮ (জুয়া)


খবরদার!! জুয়া খেলবেননা কিন্তু বলে দিলাম। কেউ আপনাকে নিয়ে খেলুক আর না খেলুক আপনি কিন্তু খেলবেননা। কেননা এটা যেমন আপনাকে শতভাগ জিতিয়ে দিতে পারে অনেক অনেক সাফল্য দিয়ে তেমনি ভাবে হারিয়ে দেয়ার ও সম্ভাবনা শতভাগ। তবে আপনি আপনাতেই যে জুয়ার ময়দানে নেমেছেন এটা বেশ নিশ্চিত আমার কাছে।

আমাকে নিয়েও কেউ খেলছে এটা আমি ভালো করেই জানি। আমি সেই মাঠে ফুটবলের মতো খেলে যাই জীবনের গোল নিয়ে। বিশ্বকাপ নিয়ে বিরাট জুয়ার আসর বসে বিশ্বের নামিদামী শহরগুলোতে। তেমনি আমার বা আপনার জীবনটাতেও এমন একটি ছায়া পরিলক্ষিত হয়। মানুষের একটা বদ অভ্যাস হলো সে সকল সময়ই স্রষ্টার কাছা কাছি পৌছুতে চায়। নাহ ভালোবাসায় নয়। তার ঐদ্ধ্যত্য, শক্তি ও সামর্থের দিক দিয়ে। কখনো কখনো নিজেকেই স্রষ্টা দাবি করে বসে। বুদ্ধি লোপ পেতে এবং ফিরে পেতে এদের মুহুর্তের বেশী সময় লাগেনা। আবার কেউ কেউ শত বছরেও পথ প্রাপ্ত হয়না।

যাকগে, ফিরে আসি জুয়ার আসরে। সন্তান জন্ম দেয়াটা হচ্ছে একটা মানব জীবনের প্রথম অভিষেক জুয়ার আসরে। কেননা এখানেও সন্তানের জীবনের সমৃদ্ধি ও ধ্বংস দুটোই সমান ভাবে খেলা করে পিতা মাতার চোখে। একটু অসাবধান চালই ঐ সম্ভাবনাকে সাফল্যের সাথে ধ্বংস করে দিতে যথেষ্ট। আবার সঠিক সতর্কতা পারে এই ক্ষতির দরজা বন্ধ করে দিতে।

এবার সেই সন্তান জুয়া খেলছে বিয়ের আসরে। বিয়ে করছে (হিন্দু সংস্কৃতি থেকে মুসলিম সমাজে আমদানি কৃত পদ্ধতি) সবার পছন্দ করে দেয়া এমন একজন কনে যার সাথে একমাত্র সংসার করা ছাড়া বুঝার উপায় নেই যে দাম্পত্য জীবনে কি জয়ী হলাম নাকি পরাজিত এক জুয়াড়ী আমি!! আবার যারা পূর্ব পরিচিতদের বিয়ে করছে তাদের মধ্যেও এই সম্ভাবনা কাজ করে যে, দূরে থেকে যতটুকু চিনলো কাছে এসে সেই চেনা পরিবর্তিত হয়ে যায় কিনা। অবশ্য ইসলাম পছন্দ করার অধিকার দিয়েছে শুধুমাত্র তাকেই যে বিয়ে করবে। এ ব্যাপারে তার আত্মীয় স্বজনের চাপাচাপি করার কোনো অধিকার দেয় নি। অন্যান্য ধর্মে এ ব্যাপারে বিশাল নিয়ম কানুন থাকলেও ইসুলাম শুধুমাত্র তাকওয়াকেই সৌন্দর্যের একমাত্র মাপকাঠি হিসেবে নির্ধারন করে দিয়েছে।

এবার আরো একটি অদ্ভুত বিষয় নিয়ে আসছি। যারা ইসলামকে মানেন কিন্তু জানেননা তারা (ছেলেরা) বিয়ে করেন তার মা বাবার সেবা যত্ন করবে এমন একটা মেয়েকে। অথচ ইসলাম কোথাও শশুর শাশুরীর খেদমতের জন্য কন্যাদেরকে তাগিদ দেয় নি। মাফ চাই। মহামান্য শশুর শাশুরীরা। দয়া করে আমার দিকে এমন কটাক্ষ হেনেননা। আমি জাষ্ট যেটা ইসলাম বলে সেটা বললাম। মা এবং বাবার খিদমতের জন্য একমত্র সন্তানদেরকেই তাগিদ দেয়া হয়েছে। তবে আমাদের সমাজ কিন্তু এর উলটো। নির্ঘাত সবাই লাঠি নিয়ে তেড়ে আসছেন। আসেন আসতে থাকেন।

এবার আসুন আরেকটা ভেজাল লাগিয়ে দেই। চাকরী বাকরী করাটাও আরেকটা জুয়ার অংশ। কারন আমরা কেউ ই নিজেদের পছন্দের কাজ করিনা। সমাজে যে কাজটার দাম বেশী পছন্দ হোক আর অপছন্দ হোক... নিজের ইচ্ছায় হোক আর মুরুব্বিদের ইচ্ছায় হোক আমরা সেটাই করে যাই। যার ফলে সাফল্য ও পতন দুটোই সমান অংশীদার। আমরা জানিনা আমরা কোথায় যাচ্ছি। এই পথ কি ক্রমান্বয়ে অন্ধকার হচ্ছে নাকি আলোর দিকেই এগিয়ে গিয়েছে?

জীবনটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় জুয়া। মৃত্যু আমৃত্যু পেছন পেছন হাটছে। কিন্তু সাবধান!! আপনি আমি অনুমোদিত নই। তাই বলে কেউ মাইন্ড কইরেননা। আমাদের জন্য অনেক কিছু করা নিষেধ। স্রষ্টার জন্য আমাদের হুকুম প্রজোয্য নয়। এই তো ক্ষেপে গেলেন। আরে বুঝে নিন আগে কি বলতে চাচ্ছি। আমাদের আলেমসমাজ আবার বলবেন নাফরমান হয়ে গেছে লাল বৃত্ত। যেমন স্রষ্টার জগতে অনেক অনেক মদ রয়েছে... কিন্তু আপনি কি এই জগতে তা পান করতে অনুমোদিত? স্রষ্টার জগতে অনেক অনেক নারী পুরুষ (পুরুষের জন্য নারী, নারীর জন্য পুরুষ হুর) আছে- কিন্তু মশাই এই জগতে চার জনের বেশী অনুমোদন কি আপনার আছে? তাহলে তাঁর জগতের আইন আর আপনার জগতের আইন কি আলাদা নয়?

সুতরাং মহান সম্মানিত সেই প্রিয় প্রভুর খেলা এই সামান্য মস্তিষ্কে বুঝতে গিয়েই আমি পাগল হয়ে গেছি। আমাকে দোষ দিয়ে কি লাভ??(চলবে)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সুদুর চোখে সমুদ্র

প্রায় প্রতিদিনের মতই আজো ত্রস্তপায় সন্ধ্যারা ভীত ক্লান্ত গার্মেন্ট শ্রমিক হাছিনার ব্যাথায় কাতর হাটুর উপর ভর করে পৃথিবীর বুকে নেমে এলো। পৃথিবীর কি আসলে বুক আছে? উহু!! তাতো থাকার কথা নয়। সবটাই পিঠ। বলা উচিৎ পৃথিবীর পিঠে নেমে এলো। সাধারনত আমরা পিঠটাকে আবার কোল বলতে পছন্দ করি। সাহিত্যিক একটা ভাব নিয়ে বলা যায় ক্লান্তিকর বিরক্তভরা অন্ধকার তার গাঢ় নীল রঙএ লাশের গায় জড়ানো শেষ কাপড়গুলোর মত পৃথিবীর কোলকে আবৃত কছে। এইসব উলটাপালটা ভাবতে ভাবতে জানালা দিয়ে রাত্রীর ভয়াবহ আগমনে পলায়নপর সূর্যের শেষ উঁকিঝুকি দেখে জীবন সায়াহ্নে অলস দিনগুলো কাটাচ্ছে মাহমুদ। ধিরে পরিচিত সব বিদায় নিচ্ছে। কিছুদিন হলো ঘাসফরিং উড়ে গেছে, তার আগে বৃষ্টিরদাগ ধুয়ে মুছে গেছে পৃথিবীর কোল থেকে। বিদ্রোহী প্রাণ নিভু নিভু করে খুব নিচু স্বরে তার নাতনীর সাহায্যে মোবাইলে বিড়বিড় করে অস্পষ্ট স্বরে। ওদিকে নষ্টালজিকের চুল পেঁকে বুড়ো। তারিক, শিহান সবার বুঝি সন্ধ্যা ঘনালো। একসময় এই রঙ্গীন জগতের সব রঙই চোখে ধুসর হয়ে ধরা দেয়। কিন্তু তখন আসলে কোন চশমা লাগিয়েও জগতের রঙ গুলোকে ফ্যাকাশে হওয়া থেকে নিস্তার দেয়া যায় না। ওটাই আসলে ধারিত্রীর র

নামাজি কাজ ফেলিয়া

আজ নামাজি কাজ ফেলিয়া ছুটিছে দেখ সিজদাতে, এমনি করে জগত ভরে হোক জমায়েত রোজ রাতে। খোদার ঘরে দরুদ পরে হাজার হাজার মুসলমান; দোর খোলা দিল পথ ভোলা দিল সবমিলে আজ উজাড় প্রাণ। হয় মুসাফির বছর ভুলে আজ কেবলি ঝুকলো শির। কেমন করে আঙ্গুল তোল? তুমিই কে বা মহান পীর? খোদার কাছে কাঁদল অবুঝ কাঁদল পাপী, কদরদান। কান্নাটা তো আসল ছিল, হোক না সে খুব অচলপ্রাণ! এইচ আল বান্না © 2017

হাল ছেড়ে দিলে বন্ধু??

হাল ছেড়ে দিলে বন্ধু?? জীবনকি এভাবেই তোমাকে বহমান স্রোতধারায় ভাসিয়ে নিজ়ে যাবে?? আজ কোনো কঠিন শব্দ গুচ্ছ আমাকে আক্রমন করেনা... আমি নিজেই আপন ব্যাথায় আহত... বুকের কোথাও খেজুর কাঁটার খোঁচার মতো তীক্ষ্ণ ব্যাথা ধীরে প্রশস্ত অবয়ব নেয়... নিয়ে নেয় একাই পর্যদুস্ত... পরাজিত হয়ে গেলে তুমি?? তুমি না বিজয় শেখাও??? তুমি না আকাশকে পকেটে পুরে মেঘের হাওয়াই মিঠাই আপন মুখে আপন সুখে সুখ মেলাও!! দেখবে কোথায় আকাশ লুকায় কান্না ঝড়ায় পাহাড় গায়ে নয়তো কোথাও বিষন্নতাও ডুকরে কাঁদে মাঝির নায়ে একটু ধারে জীবন পারে কোন বেহালা বাদক বসে... ভেজায় তাহার আপন সুরে এক অবেলার দূঃখ রসে? উত্থান পতনের ক্রমাগত আঘাতে বেসামাল জীবন তোমার... আমিও ভাবি... হয়তো বেশী দিন নেই, আমার দুখের পাপড়ি ভাঙ্গার... অনেক সুখেই কাটছে আমার দিন প্রতিক্ষন সন্ধ্যা লগন... একজনাকেই সব শপেছি... প্রার্থনাতে তাই জপেছি... অনেক কষ্ট আর বেদনা নিয়ে তুমি পালিয়ে যাবে?? তিনিকি এর চেয়েও বেশী কষ্ট কাউকে দেননি?? পরীক্ষা করেননি?? হাল ছেড়ে দিলে বন্ধু??