সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সুদুর চোখে সমুদ্র



প্রায় প্রতিদিনের মতই আজো ত্রস্তপায় সন্ধ্যারা ভীত ক্লান্ত গার্মেন্ট শ্রমিক হাছিনার ব্যাথায় কাতর হাটুর উপর ভর করে পৃথিবীর বুকে নেমে এলো। পৃথিবীর কি আসলে বুক আছে? উহু!! তাতো থাকার কথা নয়। সবটাই পিঠ। বলা উচিৎ পৃথিবীর পিঠে নেমে এলো। সাধারনত আমরা পিঠটাকে আবার কোল বলতে পছন্দ করি। সাহিত্যিক একটা ভাব নিয়ে বলা যায় ক্লান্তিকর বিরক্তভরা অন্ধকার তার গাঢ় নীল রঙএ লাশের গায় জড়ানো শেষ কাপড়গুলোর মত পৃথিবীর কোলকে আবৃত কছে। এইসব উলটাপালটা ভাবতে ভাবতে জানালা দিয়ে রাত্রীর ভয়াবহ আগমনে পলায়নপর সূর্যের শেষ উঁকিঝুকি দেখে জীবন সায়াহ্নে অলস দিনগুলো কাটাচ্ছে মাহমুদ।

ধিরে পরিচিত সব বিদায় নিচ্ছে। কিছুদিন হলো ঘাসফরিং উড়ে গেছে, তার আগে বৃষ্টিরদাগ ধুয়ে মুছে গেছে পৃথিবীর কোল থেকে। বিদ্রোহী প্রাণ নিভু নিভু করে খুব নিচু স্বরে তার নাতনীর সাহায্যে মোবাইলে বিড়বিড় করে অস্পষ্ট স্বরে। ওদিকে নষ্টালজিকের চুল পেঁকে বুড়ো। তারিক, শিহান সবার বুঝি সন্ধ্যা ঘনালো। একসময় এই রঙ্গীন জগতের সব রঙই চোখে ধুসর হয়ে ধরা দেয়। কিন্তু তখন আসলে কোন চশমা লাগিয়েও জগতের রঙ গুলোকে ফ্যাকাশে হওয়া থেকে নিস্তার দেয়া যায় না। ওটাই আসলে ধারিত্রীর রঙ। কোন কিছুর শুরুটা যেমন মৌলিক তেমনি শেষটাও মৌলিক। মৌলিক বলে আসলে যার ব্যাখ্যা দেয়া হয় তা কতটা মৌলিক? হয়তো সেই মৌলকে ভাঙ্গলে আরো কিছু যৌগিকতা খুঁজে পাওয়া সম্ভব কিন্তু আমাদের কাছে তা করার মত কোনো যন্ত্র নেই। তাছাড়া থাকলেও টানপোড়ানের সংসারে মাহমুদের তা কেনার সম্ভাবনাও নেই। তাই জীবনের মৌলিকত্বকে চ্যালেঞ্জ করা সাজে না।

অবশ্য সংসার বলতে একটা ল্যাপটপ, টেবিল, চেয়ার আর খাট। কয়েকটি ব্যাবসায় ইনভেষ্ট থেকে প্রতিমাসের আয়ের এক তৃতিয়াংশ আশ্রয়ের ফান্ডে চলে যায় অটোমেটিকলি। আর বাকি অংশ দিয়ে অনলাইন অর্ডার করেই বাজার সদাই আর জামাকাপর কেনা, ধোয়া, রান্না সবই হয়। বয়সটা হাড়ের উপর এমন ভাবে চেঁপে বসে যে নড়াচড়া করা খুবই রিস্কি। কি আশ্চার্য, একসময় মনে হতো এই দেহের আদম্য শক্তি এই জোয়ানের জৌলষ কেউ কেড়ে নিতে পারবেনা। কিন্তু হায়--- সময় মোমের মত ধিরে গলিয়ে দিলো সর্বশক্তি। এখন যৌবন কেবল মনে হয় যেনো গতরাতে কিংবা ভোরের আলসে ঘুমে দেখা কোনো স্বপ্ন যা বাস্তব ছিলোনা কোনদিনই। আসলে বার্ধক্য মানুষকে তার যৌবন সম্পর্কে সামান্য কিছু টুকরো স্মৃতি ছাড়া খুব একটা উপকারী কোনো কিছু উপহার দিতে পারেনা। যা অনেকটাই গরুর জাবর কাটার মত।

আল্টাইম নিউজের সাইটে সর্বশেষ সংবাদ দেখার জন্য স্কৃনের ভিজুয়াল কীবর্ডে ঝড় তুললেন বুড় আঙ্গুল গুলোর ক্ষয় হতে থাকা ক্যালশিয়ামের জোরে। “নরওয়ের নোবেল পাওয়া শান্তিকর্মী ও ক্ষমতাসীন সরকারের অন্যতম প্রভাবশালী মন্ত্রী নোরা হাল্ভরসেন আগামী কাল ঢাকায় আসছেন”। দেশে সৃংখলা ও আইনের শাষন নিশ্চিত করতে সহায়তা প্রদানে বিরোধী দলের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহবান। সেই সাথে নানান কাটাকাটি মারামারি। ধুর--- আর কত? মৃন্ময়ীকে আলজাজিরার এক বড় সাংবাদিক বলেছিলেনঃ কোন সুসংবাদ সংবাদ হওয়ার যোগ্যতা রাখেনা। তাহলে আর অবাক হওয়ার কি আছে?

========================================

র‌্যডিসনের স্যুটে দুতাবাসের লোকজনের ভির লেগে আছে। এদিকে ক্ষমতাসীন দলের কেবিনেটরা ব্যাকুল হয়ে জানতে চাচ্ছে আসন্ন নোবেলে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি স্থাপনের জন্য অবদান রাখা কাউকে মরনোত্তর মনোনায়ন করা হয়েছে কিনা? কেননা ৫০ বছর আগে সম্পাদিত এই চুক্তির পর আর কোন অঘটন পাহাড়ে ঘটেনি বলেই দাবি করা হয়। যদিও বিরোধীরা নানান অভিযোগ তুলে, কিন্তু এসব নাকি তারা নিজেরা ঘটিয়েই সরকারের নাম দিচ্ছে- এই হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের অভিযোগ। অবশ্য গণমাধ্যম তো এখন ক্ষমতাবানদের মাধ্যম। তারা যা চায় তা’ই ছাপানো হয় ঘটনা ঘটুক আর না ঘটুক।

এর মধ্যে বেশ লম্বা ধাঁচের ধারালো চিবুকওয়ালা মোটা ফ্রেমের চশমা পরিহিত একজন আবার দেখা যাচ্ছে সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে ঘন ঘন ঘড়ি দেখছে। ১১টা ৩০ এ মন্ত্রীর সাথে দেখা করার কথা।

মিষ্টার জামাল, ম্যাডাম ইজ কলিং ইউ।
লোকটা চশমাটাকে গায়ের ধবধবে মাড় দেয়া পাঞ্জাবীটার এক কর্ণারের সাথে মুছতে গিয়ে দেখলেন গ্লাস আরো ঘোলা হয়ে গিয়েছে। এখন এসব দেখার সময় নেই। ফাইলের কাগজ পড়তে পড়তে কোন রকমে কাংখিত রুমে গিয়ে হাজির। নোরা হাল্ভরসেন এক নজর তাকিয়েই চেয়ার ছেড়ে দাড়িয়ে সম্মান জানালো। আসসালামু আলাইকুম, ইউ আর দ্যা প্রেসিডেন্ট অব আশ্রয়?

জামাল টের পায় তার পিঠে জামাটা ঘামের সাথে লেপ্টে যাচ্ছে। ইয়েস মাই অনার। বাট --- একজন খাঁটি ক্রিশ্চিয়ানের মুখে সালাম শুনে কিরকম যেনো একটা অনুভুতি হচ্ছে তাও আবার এতো উপরের লেভেলের একজন মানুষ।

প্লিজ জামাল, মে উই ভিজিট আশ্রয়’স প্রোজেক্ট নাউ?

শিওর।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তা আমতা আমতা করছিলেন। তাদের ভাব সাব দেখে জামাল স্পষ্ট টের পেল যে ক্ষমতাসীনদের কোন অর্গানাইজেশনাল ওয়ার্ক ভিজিট না করে আশ্রয়ের দিকে ঝুঁকে পড়াটাই গাত্রদাহের কারণ। যদিও আশ্রয়ের কোন রাজনৈতিক সংস্পর্শ নেই, আশা ব্রাকের মত আশ্রয়ের কাউকে দিয়ে কারো স্বার্থোদ্ধারে ব্যাবহৃত হয়না। এর পরেও নিজের দলের না হলে সে মানুষ নয় এমন একটা আদীম আগুন এখনো সবগুলো দলকেই ঘিরে রেখেছে।

নোরা স্বর্গীয় আনন্দে অভিভুত বাচ্চাদেরকে পেয়ে। ৩০ বছর ধরে তার নামে এবং তার সঙ্গঠনের পাঠানো ফান্ডে আশ্রয়ের বিশেষ এই এডুকেশনাল প্রজেক্টটি চলমান। ওদের সাথে গান গেয়ে, নেচে- এমনকি নোনা রস নিসৃত হচ্ছে নাক দিয়ে এবং তাতে জিবের আগা দিয়ে স্বাদ চেখে দেখছে এমন বাচ্চার নাক নিজ হাতে টিস্যু দিয়ে মুছে দিয়ে দেশবাসীকে অবাক করে দেন। চ্যনেলের লোকজনের আনাগোনা সারাক্ষণ। সবাই ফিসফাস করছে। অনেক চ্যনেল এই সফর লাইভ প্রচার করছে আবার কেউ কেউ প্রতি ৩০ মিনিট পর পর আপডেট দিচ্ছে। সব দিকেই প্রচন্ড ভির। পুরো রায়ের বাজার বস্তি ও তার আশেপাশের এলাকা লোকে লোকারন্য। কিন্তু নোরা বোধহয় কাউকে খুঁজছে। তার অস্থির চোখের তারা এমন কিছুরই আভাস দিচ্ছে। সব দিকে সবাই। কিন্তু কোন এক স্বজনের অনুপস্থিতি টের পাচ্ছে। যে তাকে দুর্বার গতিতে টেনে এনেছে। কৈশরের অস্থিরতা ধিরে জেগে উঠছে এই প্রান্ত যৌবনা মনে। কি এক অদ্ভুত চপলতা কাজ করছে আজ, বুঝতে পারছেনা। এমন একটা রাষ্ট্রিয় পজিশন। কিন্তু প্রফেশনালিজম টা উবে যাচ্ছে। খোলস ছেড়ে ভেতরের ব্যাক্তি মানুষটা ধিরে বেড়িয়ে আসছে। বাংলাদেশে সরকারী সফর শুনতেই মনটা আনচান করে উঠেছিলো। মনের ভেতর কিরকম একটা আশা কিংবা কামনা জেঁকে বসেছে। ঠিক যেনো ১৪বছরের ফিলিংসগুলো। সেই বয়সেই “স্কুল অব লাইফ, এডমিশন গোয়িং অন” তাকে বাংলাদেশের প্রেমের বাঁধনে জড়িয়ে নেয়। বেলাভুমিতে যখন মেয়েটি দৌড়াচ্ছিলো ঐখানে নিজেকে যে কতবার কল্পনা করেছে তা গুনে শেষ করার উপায় নেই।

একটু ছায়ায় দাড়িয়ে চশমাটা ভালোভাবে মোছার সুযোগ পেলো জামাল। বিষয়টা তার কাছে খুবই এবনরমাল ঠেকছে। এই দারীদ্রের দেশে মন্ত্রীতো দূরে থাক নেতারাও গরীবের গন্ধ পেলে দুবার সুগন্ধী স্প্রে করে নিজেদের শরীরে “আরে ব্যাটা তোরা তো সব গরীবের পোলাপাইনই, রাজনীতি করিস বলেইনা এতো গরম”। আর এই ভদ্রমহিলা কত একটা ধনীদেশ থেকে এসে এমন আচরণ করছে যেনো এসব কোনো ব্যাপারই না, সার্ফেক্সেল আছেনা!! এই টাইপের ভাব ভঙ্গী। ভারি চশমার আড়ালে তারুন্য দীপ্ত চক্ষু যাকে দেখে অবাক হচ্ছে তাকে নিজের দিকে এগিয়ে আসতে দেখে আবারও ঘামাতে শুরু করছে জামাল।


=========================================


বয়স মনে হচ্ছে খুব রকম বেড়ে গিয়েছে। মাহমুদ নিজের সম্বন্ধে এমনটাই আজকাল ধারণা করছে। কারন মানুষের যখন টাইম ওভার হয়ে যায় তখন তার চারপাশের সবাই তার উপস্থিতি কিংবা বেঁচে থাকা শ্বাসপ্রশ্বাসের শব্দ শুনেও তাকে ভুলে যেতে পছন্দ করে। আবার নিজের আচরণে তীব্র একটা পরিবর্তন ঘটে যেটা নিজে বুঝতে পারেনা। মনে হয় যে ঠিকই করছি। কিন্তু এটাযে বার্ধক্যের শিশুসুলভ আচরণ তা অন্য সবার কাছে ধরা পরলেও নিজের চোখ তা আবিষ্কারের শক্তি হারায়। যৌবনে মানুষের কল্যানে ক্ষয় করে দেয়া হাড়গোরের আড়ালে নিজেকে এখন একা মনে হয়না। মনে হয় সবার মাঝেই আমি আছি। যদিও সবাই হয়তো ভুলে গেছে আমাকে, তাতে কি? আমিতো ছিলাম একদিন। এবং পাওনাগুলো যদি কোনো কারনে বিনষ্ট না হয় তাহলে ওপারের জীবনে পাওয়ার যথেষ্ট বিশ্বাস আছে। স্কৃনের দিকে তাকিয়ে নিউজ পোর্টালের লাইভ সমপ্রচার ও আপডেটগুলো দেখছে। বাইরে পুলিশের সাইরেন শুনা যাচ্ছে। আজকাল অবশ্য শহরে চুরিচামারি বেড়ে গিয়েছে, এই শব্দ নিয়মিতই প্রায় বলা যায়। কলিং বেলের শব্দে ভাবনার বিস্তৃত ডানা সুরুৎ করে গুটিয়ে যায়।

দুর্বল হাতে দরজার নব খুলে নীল দুটি চোখ নজরে পরে। ‘সালামু আলাইকুম মাহমুদ’ বলেই জড়িয়ে ধরলো। এবং গালে চুম্বন এঁকে দিলো কিছু বুঝে উঠার আগেই। বার্ধক্যের দুর্বল কন্ঠ ছাপিয়ে আওয়াজ আসে- সালাম দিলে আবার হাগিং করলে কেনো?

নোরা লজ্জা পেয়ে কি বলবে বুঝে উঠতে পারেনা। আই রিস্পেক্ট ইউর কালচার বাট আই ফরগেট টু স্টপ মি ফ্রম মাই কালচার। রিয়েলি সরি।

মাহমুদ ঘরের সংক্ষিপ্ত আসবাবে বসতে ইশারা করে বলে নো নো--- ইটয ওকে। শুদ্ধ ইংলিশে যা বলে যায় তা হচ্ছেঃ ভাগ্য ভালো যে আমার জোয়ান কালে আসোনি। তখন এলে এতোক্ষণে মানবজমিন কিংবা বাংলাদেশ প্রতিদিনের লিড নিউজ হয়ে যেতাম। তাছাড়া নানান পক্ষের পতিক্রিয়ায় সমাজ সেবা লাঠে উঠতো। কারন এদেশে কেবল রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় যারা সমাজ সেবা করে নিজেদের পকেট ভারি করে তারা ছাড়া অন্য যেই আসুক তাকে পাপোসের সমানও মূল্য দেয়া হয়না। কোন ছুতা পেলেই চেঁচামেচি আর এর সাথে ওর সাথে লিঙ্ক খোঁজার চেষ্টা।

মাহমুদের বকর বকরে ক্লান্ত হয়না এই নোবেল বিজয়ী মানুষটি। অথচ এই রুমের বাইরেই মন্ত্রনালয় ও দুতাবাস আর নিরাপত্তা কর্মীরা ভয়াবহ বিরক্তিতে চোখ নাক মুখ কুঁচকে আছে।

নোরা শিহরিত হয়। কৈশরের ঠিক শুরুর দিকে মাত্র চৌদ্দ বছরের একটা মেয়ে ফেসবুকে ম্যাজিকের মতই আনমনে খুঁজে পায় মাহমুদকে। সামাজিক কাজ, গান, আর সাহিত্য নিয়ে মত্ত এই মানুষটি প্রথম সপ্তাহেই তার বিবেকের দরজা খুলে দেয়। নরওয়ের সোসাইটি অনুযায়ী স্কুলের পড়াশুনা আর পার্টি আড্ডা বন্ধু নিয়ে মেতে থাকা চতুর্দশী কিশোরী অবাক হয়ে যায় একটি মানুষের নৈতিক ষ্ট্রেংথ দেখে। তার প্রচলিত জীবনের বাইরেও যে আরেকটি নতুন ভাবনার জগৎ ও পৃথিবী আছে তা এর আগে কখনোই মাথায় আসেনি। স্কাইপিতে এক সপ্তাহ কথা বলার পর যখন বুঝতে পারে যে এই যুবক কিছুটা ভিন্ন প্রকৃতির তখন সে তার ভেতরের কথা জানায়। ইন্টারনেটে এই প্রথম কোন পুরুষের দেখা সে পেলো যে কিনা তাকে কোন (গার্লফ্রেন্ড, প্রেমিকা কিংবা অশালীন সম্পর্কের) অফার করেনি।

ইউ নো মাহমুদ?
হোয়াট?
ইউ আর মাই আইডল।

ধিরে ধিরে তাঁর ইনফ্লুয়েন্সে স্কুলের বন্ধুদেরকে নিয়ে গড়ে তোলে দ্যা পিস মেকার। একসময় সব কিছু ছাপিয়ে ব্যাস্ততারা কিলবিল করে জড়িয়ে ধরে। কিন্তু নোবেল প্রাইজটা হাতে নেয়ার মুহুর্তে বুকের মধ্যে লুকিয়ে থাকা মাহমুদ নামটা বার বার ঠোটে আওড়াতে থাকে। অন্তর্জালের এই মজবুত যোগাযোগেও আর সম্ভব হয়নি মাহমুদকে খুঁজে পাওয়া। হয়তো কোন কারনে নিজেকে সবকিছুথেকে গুটিয়ে নিয়ে অধ্যাপনাকেই আপন করে নিয়েছে সে। আজ বহুদিন পরে জীবনের সমস্ত অর্জনের পেছনের মানুষটাকে দেখে কিরকম একটা অনুভুতি হচ্ছে তা লিখিত শব্দমালায় প্রকাশ করা আসলেই দুঃস্বাধ্য একটি বিষয়। কারন মনোরসায়ন কোনো ভাষার নিয়ম মানেনা।

মাহমুদ তার ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া খয়েরী চোখের তারার মধ্য দিয়ে নীল সমুদ্রসম দুটি চোখে তাকিয়ে দেখে- এ কোন বিশাল সেলিব্রেটি নয়, কোন মন্ত্রী কিংবা হর্তাকর্তা কেউ নয়। এতো সেই কিশোরী। দূর দেশের বন্ধু। আই ক্যান সি দ্যা ওশান ইন ইউর আইজ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

নামাজি কাজ ফেলিয়া

আজ নামাজি কাজ ফেলিয়া ছুটিছে দেখ সিজদাতে, এমনি করে জগত ভরে হোক জমায়েত রোজ রাতে। খোদার ঘরে দরুদ পরে হাজার হাজার মুসলমান; দোর খোলা দিল পথ ভোলা দিল সবমিলে আজ উজাড় প্রাণ। হয় মুসাফির বছর ভুলে আজ কেবলি ঝুকলো শির। কেমন করে আঙ্গুল তোল? তুমিই কে বা মহান পীর? খোদার কাছে কাঁদল অবুঝ কাঁদল পাপী, কদরদান। কান্নাটা তো আসল ছিল, হোক না সে খুব অচলপ্রাণ! এইচ আল বান্না © 2017

হাল ছেড়ে দিলে বন্ধু??

হাল ছেড়ে দিলে বন্ধু?? জীবনকি এভাবেই তোমাকে বহমান স্রোতধারায় ভাসিয়ে নিজ়ে যাবে?? আজ কোনো কঠিন শব্দ গুচ্ছ আমাকে আক্রমন করেনা... আমি নিজেই আপন ব্যাথায় আহত... বুকের কোথাও খেজুর কাঁটার খোঁচার মতো তীক্ষ্ণ ব্যাথা ধীরে প্রশস্ত অবয়ব নেয়... নিয়ে নেয় একাই পর্যদুস্ত... পরাজিত হয়ে গেলে তুমি?? তুমি না বিজয় শেখাও??? তুমি না আকাশকে পকেটে পুরে মেঘের হাওয়াই মিঠাই আপন মুখে আপন সুখে সুখ মেলাও!! দেখবে কোথায় আকাশ লুকায় কান্না ঝড়ায় পাহাড় গায়ে নয়তো কোথাও বিষন্নতাও ডুকরে কাঁদে মাঝির নায়ে একটু ধারে জীবন পারে কোন বেহালা বাদক বসে... ভেজায় তাহার আপন সুরে এক অবেলার দূঃখ রসে? উত্থান পতনের ক্রমাগত আঘাতে বেসামাল জীবন তোমার... আমিও ভাবি... হয়তো বেশী দিন নেই, আমার দুখের পাপড়ি ভাঙ্গার... অনেক সুখেই কাটছে আমার দিন প্রতিক্ষন সন্ধ্যা লগন... একজনাকেই সব শপেছি... প্রার্থনাতে তাই জপেছি... অনেক কষ্ট আর বেদনা নিয়ে তুমি পালিয়ে যাবে?? তিনিকি এর চেয়েও বেশী কষ্ট কাউকে দেননি?? পরীক্ষা করেননি?? হাল ছেড়ে দিলে বন্ধু??