মাঝ রাতে কেউ দরজায় নক করলে সাধারনত সবাই বিরক্ত হয়।আর মাঝ রাতও কি এমন মাঝ রাত যখন নিশাচর শেষ প্রানীটি ও ঘুমিয়ে যায়।
শুধু দুইধরনের জীবেরা সজাগ থাকে। ১।প্রভুকে স্মরন কারী ২।চোর
ঠক’’ঠক’'
কে?
আমরা
আমরা কারা?
থানার লোক।
ও আচ্ছা
বলেই আমি দরজা খুলে দেই। ওরা আমাকে জিজ্ঞেস করছে মান্নান নামের কাউকে চিনি কিনা।এই এলাকায় বাসা।প্রচন্ড ঘুমে আমার সাড়া মাথা এলোমেলো। ভিতরে চিন্তা গুলো কোথাও বসার যায়গা খুজে পাচ্ছেনা। তাই এক যোগে নাচানাচি শুরু করে দিয়েছে।এলোমেলো ভাবে চিন্তা করে কোথাও মান্নান নামে কাউকে খুজে পেলাম না।
আমার বাসায় ঢুকার আগে ওরা আমার পাশের বাসায় খোঁজ নিয়েছিলো।সেই লোক আবার ইসলামী ব্যাংকে ভাল চাকুরী করেন। অনেক ভাল একটা মানুষ।আমি আনিস কাকা বলে ডাকতাম।উনি ভাবলেন আমি হয়তো মান্নান কে আবিষ্কার করতে পারবো তাই তিনি আমাদের বাসা দেখিয়ে বললেন এই বাসায় একটা ছেলে আছে ও হয়তো বলতে পারবে।তারা আর কি করবে এই মাঝরাতে ই তাদের মান্নান কে চাইই।দিনের বেলায় নিশ্চিত সে একজন ভয়ংকর জীবে পরিনত হয়।আর মাঝরাতে সে আর সবার মত সাড়ে তিন হাতের একটা সাধারন মানুষ।যাকে মন চাইলে ই চিমটি দেয়া যাবে।আবার দড়ি দিয়ে বেধে নিয়ে আসা যাবে।
আমাকে মান্নানের খোঁজ জিজ্ঞেস করার পর হ্যন্ডসাম দেখতে একজন এস,আই আমার নাম জানতে চাইলো।আমি নাম বল্লাম।আমার নামটা অনেক আনকমন একটা নাম যার কারনে ওরা নামটা ঠিক ভাবে পরতে পারে নি।আসলে আমি ই ছিলাম ওদের কাগজে।লম্বা দাড়িওয়ালা একজন পুলিশ আমাকে বললেন আপনাকে আমাদের সাথে যেতে হবে।কিন্তু ততক্ষনে সর্বনাশ যা হওয়ার তা হয়ে গেছে।আম্মু সজাগ হয়ে গেছেন।
পৃথিবির এই একটা মানুষ যার হৃদয়ের ভেতরে অবিরাম স্নেহের নদীটা বইতে ই থাকে তার চোখ ফাকি দেয়া এতো সহজ না।আম্মু বললেন তুমি কথায় যাচ্ছ?তাছাড়া মাঝরাতে এতো পুলিশ কেনো?
আম্মু কোনো চিন্তা করবেন্না। আমি কাল ভোরে ই ফিরে আসবো।ইনশাআল্লাহ।
আম্মুর গলাটা ভিজে যাচ্ছে।কান্না মেশানো কন্ঠে তিনি পুলিশদের কাছে জানতে চাইলেনঃ আমার ছেলেকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?চিকনা চাকনা একটা পুলিশ অস্পষ্ট ভাষয় আম্মু কে কিছু বললো।তিনি বুঝলেন কিনা জানিনা।আমি শুধু একটা গেঞ্জি পড়ে ছিলাম।যা গরম পড়েছে।মাথার চিন্তা গুলো এখনো নিজ নিজ যায়গায় সেট হয়নি।বুড়ো চাচাকে বললাম আমি পাঞ্জাবি পড়ে আসি।ভয় পাবেননা আমি পালিয়ে যাবনা।আঙ্কেল তার অস্বচ্ছ চোখে তাকিয়ে কি যানো একটা ভাবলেন। হয়তো ভাবছেন ভয় আসলে কার পাওয়া উচিত? যাই হোক আমি অন্দর মহলে গেলাম জামা চেঞ্জ করতে। আমার সাথে দুজন পুলিশ যেতে লাগলো।
দয়া করে ভেতরে আসবেননা।এখানে মহিলারা আছে।ওরা পরস্পরের মুখ চাওয়া চাওয়ি করে ওখানে ই দাড়িয়ে পড়লো।আমি পাঞ্জাবী গায়ে ওদের সাথে যাচ্ছি।এমন সময় পৃথিবীর সব উতকন্ঠা ভীড়করে মায়ের ফের প্রশ্নঃ বাবা তুই কোথায় যাচ্ছিস?আম্মুর গলা কাঁপছে।প্রচন্ড ভয় আর বিষ্ময়ে তার বুকের ভেতরে তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে।বুকের ধন কে চোখের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশের পোষাক পড়া কিছু লোক।হয়তো ওরা পুলিশ নয়।তার ছেলে কে নিয়ে মেরে ফেলবে।মায়ের অস্থির বুকে কতো আশংকার আনাগোনা।এমনি সংশয় ভরা উদ্বিগ্ন একটি কোমোল হৃদয়ের স্নেহ থেকে খুব শিঘ্রই আমাকে আলাদা করা হয়। পুলিশ ভ্যানটা আমাদের বাড়ীর সামনে ই দাড় করানো ছিলো।আধো অন্ধকারে ওটাকে অনেকটা ভৌতিক দেখাচ্ছে।কিন্তু আমার ভয় গুলো কোথায় উবে গেছে কি জানি!!হয়তো চিন্তাদের লম্ফযম্ফ শেষ হলে কিছুটা ভয় পাওয়া যেতে পারে।লুঙ্গিটা বেশ শক্ত করে ই পরতে হয়েছে।কারন হাতকড়া কখন খুলে তার কোনো ঠিক নেই তো।গাড়ীর ভিতরে একজন অফিসার বসা ছিলেন তার মুখটায় লাইটপোস্টের আলোয় একপাশের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছিলো।অনেকটা চেনাচেনা।কোথায় দেখেছি...।নাহ কিছুই মনে পড়ছেনা।আমাকে দেখে তিনি মনে হ্য় একটু চমকে উঠেছেন।চমকে উঠার যদিও কোনো কারন ছিলোনা তবুও হয়তো তার কাছে কোনো কারন জমা ছিলো।
গাড়ী চলতে শুরু করেছে।একই সাথে ১০জন মানুষ বসে যদি কেউ কথা না বলে শুধু মুখ চাওয়া চাওয়ি করে তাহলে সবার ই অস্বস্তিটা চরমে উঠে যায়।আমি খুব শান্ত মানুষের মতো অদের সাথে বসে আছি।আমার অবশ্য কোনো অস্বস্তি ছিলোনা।কারন আমার এটাই ভাল লাগছিলো।হয়তো সব আসামী কে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময়ই এমন হয়।অথবা বিষয়টা শুধু আমার বেলায়ই হচ্ছে।তবুও রাতটাকে অনেক সুন্দর মনে হচ্ছিলো।কারন রাত কে এত গভীর ভাবে এর আগে কাছে পাওয়া হয়ে উঠেনি।(চলবে)
শুধু দুইধরনের জীবেরা সজাগ থাকে। ১।প্রভুকে স্মরন কারী ২।চোর
ঠক’’ঠক’'
কে?
আমরা
আমরা কারা?
থানার লোক।
ও আচ্ছা
বলেই আমি দরজা খুলে দেই। ওরা আমাকে জিজ্ঞেস করছে মান্নান নামের কাউকে চিনি কিনা।এই এলাকায় বাসা।প্রচন্ড ঘুমে আমার সাড়া মাথা এলোমেলো। ভিতরে চিন্তা গুলো কোথাও বসার যায়গা খুজে পাচ্ছেনা। তাই এক যোগে নাচানাচি শুরু করে দিয়েছে।এলোমেলো ভাবে চিন্তা করে কোথাও মান্নান নামে কাউকে খুজে পেলাম না।
আমার বাসায় ঢুকার আগে ওরা আমার পাশের বাসায় খোঁজ নিয়েছিলো।সেই লোক আবার ইসলামী ব্যাংকে ভাল চাকুরী করেন। অনেক ভাল একটা মানুষ।আমি আনিস কাকা বলে ডাকতাম।উনি ভাবলেন আমি হয়তো মান্নান কে আবিষ্কার করতে পারবো তাই তিনি আমাদের বাসা দেখিয়ে বললেন এই বাসায় একটা ছেলে আছে ও হয়তো বলতে পারবে।তারা আর কি করবে এই মাঝরাতে ই তাদের মান্নান কে চাইই।দিনের বেলায় নিশ্চিত সে একজন ভয়ংকর জীবে পরিনত হয়।আর মাঝরাতে সে আর সবার মত সাড়ে তিন হাতের একটা সাধারন মানুষ।যাকে মন চাইলে ই চিমটি দেয়া যাবে।আবার দড়ি দিয়ে বেধে নিয়ে আসা যাবে।
আমাকে মান্নানের খোঁজ জিজ্ঞেস করার পর হ্যন্ডসাম দেখতে একজন এস,আই আমার নাম জানতে চাইলো।আমি নাম বল্লাম।আমার নামটা অনেক আনকমন একটা নাম যার কারনে ওরা নামটা ঠিক ভাবে পরতে পারে নি।আসলে আমি ই ছিলাম ওদের কাগজে।লম্বা দাড়িওয়ালা একজন পুলিশ আমাকে বললেন আপনাকে আমাদের সাথে যেতে হবে।কিন্তু ততক্ষনে সর্বনাশ যা হওয়ার তা হয়ে গেছে।আম্মু সজাগ হয়ে গেছেন।
পৃথিবির এই একটা মানুষ যার হৃদয়ের ভেতরে অবিরাম স্নেহের নদীটা বইতে ই থাকে তার চোখ ফাকি দেয়া এতো সহজ না।আম্মু বললেন তুমি কথায় যাচ্ছ?তাছাড়া মাঝরাতে এতো পুলিশ কেনো?
আম্মু কোনো চিন্তা করবেন্না। আমি কাল ভোরে ই ফিরে আসবো।ইনশাআল্লাহ।
আম্মুর গলাটা ভিজে যাচ্ছে।কান্না মেশানো কন্ঠে তিনি পুলিশদের কাছে জানতে চাইলেনঃ আমার ছেলেকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?চিকনা চাকনা একটা পুলিশ অস্পষ্ট ভাষয় আম্মু কে কিছু বললো।তিনি বুঝলেন কিনা জানিনা।আমি শুধু একটা গেঞ্জি পড়ে ছিলাম।যা গরম পড়েছে।মাথার চিন্তা গুলো এখনো নিজ নিজ যায়গায় সেট হয়নি।বুড়ো চাচাকে বললাম আমি পাঞ্জাবি পড়ে আসি।ভয় পাবেননা আমি পালিয়ে যাবনা।আঙ্কেল তার অস্বচ্ছ চোখে তাকিয়ে কি যানো একটা ভাবলেন। হয়তো ভাবছেন ভয় আসলে কার পাওয়া উচিত? যাই হোক আমি অন্দর মহলে গেলাম জামা চেঞ্জ করতে। আমার সাথে দুজন পুলিশ যেতে লাগলো।
দয়া করে ভেতরে আসবেননা।এখানে মহিলারা আছে।ওরা পরস্পরের মুখ চাওয়া চাওয়ি করে ওখানে ই দাড়িয়ে পড়লো।আমি পাঞ্জাবী গায়ে ওদের সাথে যাচ্ছি।এমন সময় পৃথিবীর সব উতকন্ঠা ভীড়করে মায়ের ফের প্রশ্নঃ বাবা তুই কোথায় যাচ্ছিস?আম্মুর গলা কাঁপছে।প্রচন্ড ভয় আর বিষ্ময়ে তার বুকের ভেতরে তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে।বুকের ধন কে চোখের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশের পোষাক পড়া কিছু লোক।হয়তো ওরা পুলিশ নয়।তার ছেলে কে নিয়ে মেরে ফেলবে।মায়ের অস্থির বুকে কতো আশংকার আনাগোনা।এমনি সংশয় ভরা উদ্বিগ্ন একটি কোমোল হৃদয়ের স্নেহ থেকে খুব শিঘ্রই আমাকে আলাদা করা হয়। পুলিশ ভ্যানটা আমাদের বাড়ীর সামনে ই দাড় করানো ছিলো।আধো অন্ধকারে ওটাকে অনেকটা ভৌতিক দেখাচ্ছে।কিন্তু আমার ভয় গুলো কোথায় উবে গেছে কি জানি!!হয়তো চিন্তাদের লম্ফযম্ফ শেষ হলে কিছুটা ভয় পাওয়া যেতে পারে।লুঙ্গিটা বেশ শক্ত করে ই পরতে হয়েছে।কারন হাতকড়া কখন খুলে তার কোনো ঠিক নেই তো।গাড়ীর ভিতরে একজন অফিসার বসা ছিলেন তার মুখটায় লাইটপোস্টের আলোয় একপাশের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছিলো।অনেকটা চেনাচেনা।কোথায় দেখেছি...।নাহ কিছুই মনে পড়ছেনা।আমাকে দেখে তিনি মনে হ্য় একটু চমকে উঠেছেন।চমকে উঠার যদিও কোনো কারন ছিলোনা তবুও হয়তো তার কাছে কোনো কারন জমা ছিলো।
গাড়ী চলতে শুরু করেছে।একই সাথে ১০জন মানুষ বসে যদি কেউ কথা না বলে শুধু মুখ চাওয়া চাওয়ি করে তাহলে সবার ই অস্বস্তিটা চরমে উঠে যায়।আমি খুব শান্ত মানুষের মতো অদের সাথে বসে আছি।আমার অবশ্য কোনো অস্বস্তি ছিলোনা।কারন আমার এটাই ভাল লাগছিলো।হয়তো সব আসামী কে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময়ই এমন হয়।অথবা বিষয়টা শুধু আমার বেলায়ই হচ্ছে।তবুও রাতটাকে অনেক সুন্দর মনে হচ্ছিলো।কারন রাত কে এত গভীর ভাবে এর আগে কাছে পাওয়া হয়ে উঠেনি।(চলবে)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন