বেশ কিছুদিন হলো- ভালোই ঠান্ডা পড়ছে। সবাই ওয়াড্রবে নেপথালিন না কি জেনো বলে গোল গোল সাদা সাদা ওগুলোর গন্ধমাখা মোটা কাপড়গুলো বের করছে। আম্মুও নিশ্চই এতোদিনে খাটের নিচের ট্রাংটায় ভরে রাখা কম্বল আর লেপগুলোকে টেনে বের করেছেন। অনেক যখন ছোট ছিলাম তখন শীতকালটাকে মনে হতো উৎসবের কাল। নানুবাড়ি যাওয়া ঈদ আর বার্ষিক পরিক্ষা শেষে ছুটি কাটানো মানেই শীত শীত দিন।
বোনের কানে যে সোনালী কালারের দুল ঠিক ঐ রঙের রোদ পিঠে গাঁয়ের বুড়ো মানুষদেরকে তাদের ক্ষয়ে যাওয়া মেরুদন্ডের উচু হয়ে থাকা হাড়গুলো নিয়ে বসে থাকতে দেখতাম। ভোর মানেই যেনো সবার মধ্যে একটা জাগরণী প্রবাহ। পিচ্চিপাচ্চা সব হাতে হোগলা (বিছান) নিয়ে মক্তবে ছুটে যেতো। হুজুর সুর করে সব দোয়া শেখাতেন যা একদম পাথরে খোদাইয়ের মতো মৃত্যুবধী কলজেতে লেগে থাকতো। মাটিতে ভেজা শিশিরমাখা পাতাগুলো পরে থাকতো।
খালাদের চকচকে রমনীয় ত্বকে ভোরের আলো মাখিয়ে উঠোন ঝাড়ু দেয়ার শব্দ এখনো কানে বাজে। রোদটাও ছিলো ঝকঝকে নতুন। চারিদিকে প্রাণের মহা আয়োজনে পুরো গ্রামটা যেনো ঝংকৃত হতো। খালাতো দস্যি ভাইদের সাথে ধানের ক্ষেতে গিয়ে আইলের আড়ে কিংবা প্রতি দু ক্ষেতের মাঝের উঁচু ঘাসে ভরা অঞ্চলে তরুন, মধ্যবয়সী কিংবা বৃদ্ধ খেজুরগাছগুলো দাড়িয়ে। হাড়ি ভরে কখনো নিচে টপ টপ করে রস চুইয়ে পরছে। নিচে দাড়িয়ে হা করে জিব বাড়িয়ে সেই ফোঁটা অমৃত চেখে দেখার নির্মলতারা হুট করেই বুঝি সন্ধ্যার মতো নেমে এলো জীবনে।
তবে ভুলিনি চিতই পিঠার সখ্যতায় সমৃদ্ধ সকালগুলো। নারকেল আর লাল খয়েরী রঙের ঘন খেজুরের মিঠাইয়ের মিশ্রনে এখনো মুখের ভেতরে টের পাই সেই স্বাদ। মাঝে মাঝে লুকিয়ে মিঠাইয়ের মাটির পাত্রটাকে খুঁজে বের করে আঙ্গুলে চুবিয়ে একা একা খাওয়ার কথা বাকীরা ভুলে গেলেও আমি ভুলিনি। ভাঁপা পিঠা আরেক নিয়ামত। কে যে আবিষ্কার করলো। অদ্ভুত। শীতের সকালে ভাপা পিঠা খাওয়ার মজাটা নিশ্চই সবার একই রকম। তারা কতো কিছু বানাতে জানতো। আজকালের মেয়েরা এসব মোটেই পারেনা। নাহ!! কেবল শহরই নয়- গাঁয়ের মেয়েরাও কেমন যেনো মর্ডাণ হতে চাচ্ছে। এটা অবশ্য স্যটেলাইট মিডিয়ার মহতী উদ্যোগ। সবাইকে যন্ত্র বানানোতে এর কোনো জুড়ি নেই।
শহুরে শিশুদের শৈশব তো চুরি হয়েছে বহুকাল আগেই। ক’দিন আগে দেখলাম গাঁয়ের শৈশবও চুরি হয়ে গেছে। আগের সেই পৃথিবীটা এখন আর নেই কেনো? কোথায় গেলে পাবো? আমরা না হয় পেয়েছি- তার পরে?? আমাদের পরে? ভবিষ্যতের কি হবে?
ছবিঃ গুগল মহাশয়
বোনের কানে যে সোনালী কালারের দুল ঠিক ঐ রঙের রোদ পিঠে গাঁয়ের বুড়ো মানুষদেরকে তাদের ক্ষয়ে যাওয়া মেরুদন্ডের উচু হয়ে থাকা হাড়গুলো নিয়ে বসে থাকতে দেখতাম। ভোর মানেই যেনো সবার মধ্যে একটা জাগরণী প্রবাহ। পিচ্চিপাচ্চা সব হাতে হোগলা (বিছান) নিয়ে মক্তবে ছুটে যেতো। হুজুর সুর করে সব দোয়া শেখাতেন যা একদম পাথরে খোদাইয়ের মতো মৃত্যুবধী কলজেতে লেগে থাকতো। মাটিতে ভেজা শিশিরমাখা পাতাগুলো পরে থাকতো।
খালাদের চকচকে রমনীয় ত্বকে ভোরের আলো মাখিয়ে উঠোন ঝাড়ু দেয়ার শব্দ এখনো কানে বাজে। রোদটাও ছিলো ঝকঝকে নতুন। চারিদিকে প্রাণের মহা আয়োজনে পুরো গ্রামটা যেনো ঝংকৃত হতো। খালাতো দস্যি ভাইদের সাথে ধানের ক্ষেতে গিয়ে আইলের আড়ে কিংবা প্রতি দু ক্ষেতের মাঝের উঁচু ঘাসে ভরা অঞ্চলে তরুন, মধ্যবয়সী কিংবা বৃদ্ধ খেজুরগাছগুলো দাড়িয়ে। হাড়ি ভরে কখনো নিচে টপ টপ করে রস চুইয়ে পরছে। নিচে দাড়িয়ে হা করে জিব বাড়িয়ে সেই ফোঁটা অমৃত চেখে দেখার নির্মলতারা হুট করেই বুঝি সন্ধ্যার মতো নেমে এলো জীবনে।
তবে ভুলিনি চিতই পিঠার সখ্যতায় সমৃদ্ধ সকালগুলো। নারকেল আর লাল খয়েরী রঙের ঘন খেজুরের মিঠাইয়ের মিশ্রনে এখনো মুখের ভেতরে টের পাই সেই স্বাদ। মাঝে মাঝে লুকিয়ে মিঠাইয়ের মাটির পাত্রটাকে খুঁজে বের করে আঙ্গুলে চুবিয়ে একা একা খাওয়ার কথা বাকীরা ভুলে গেলেও আমি ভুলিনি। ভাঁপা পিঠা আরেক নিয়ামত। কে যে আবিষ্কার করলো। অদ্ভুত। শীতের সকালে ভাপা পিঠা খাওয়ার মজাটা নিশ্চই সবার একই রকম। তারা কতো কিছু বানাতে জানতো। আজকালের মেয়েরা এসব মোটেই পারেনা। নাহ!! কেবল শহরই নয়- গাঁয়ের মেয়েরাও কেমন যেনো মর্ডাণ হতে চাচ্ছে। এটা অবশ্য স্যটেলাইট মিডিয়ার মহতী উদ্যোগ। সবাইকে যন্ত্র বানানোতে এর কোনো জুড়ি নেই।
শহুরে শিশুদের শৈশব তো চুরি হয়েছে বহুকাল আগেই। ক’দিন আগে দেখলাম গাঁয়ের শৈশবও চুরি হয়ে গেছে। আগের সেই পৃথিবীটা এখন আর নেই কেনো? কোথায় গেলে পাবো? আমরা না হয় পেয়েছি- তার পরে?? আমাদের পরে? ভবিষ্যতের কি হবে?
ছবিঃ গুগল মহাশয়
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন